অনেকেই হয়ত রাগের মাথায় কেউকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বলে থাকেন আরে তোর মত পিঁপড়ার সাথে কি আর লড়াই করবো। তিনি হয়তো তার জ্ঞান থেকেই এ কথা বলে থাকেন। কিন্তু তার যদি গৃহসংক্রান্ত কোন অভিজ্ঞতা থাকতো তাহলে তিনি ভুলেও একথা বলতে পারতেন না।
কারণ বলা হয়, আমাদের চিন্তা যেখানে শেষ হয় পিঁপড়ার সেখানে শুরু, যেখানে আমরা যাবার পৌঁছানোর কথা চিন্তাও করতে পারব না সেখানে তারা পৌঁছে যায় অনায়াসে। চিনির বৈয়াম, বিস্কুটের কৌটা, মধুর ডিব্বা বা এই ধরনের জিনিষ আপনি যতোই শক্ত করে লাগান বা যতোয় সেফ জায়গায় রাখেন না কেন, তাদের থেকে বেচে থাকার সুযোগ খুবই কম।
আমার মনে হয় কবুতর খামারেও এরা কম যন্ত্রণা দেয় তা নয়। আপনার হয়ত একটা পছন্দের কবুতরের বাচ্চা কালকে ফুটবে বলে আপনি আশা করে আছেন। সেটা যথারীতি ফুটেছেও…! কিন্তু গিয়ে দেখলেন যে সেটাকে পিঁপড়া বাহিনী আনন্দে মেজবান ভোজ উৎসব করছে। তখন আপনার মনের অবস্থা টা কেমন হবে একবার ভেবে দেখেছেন?
আপনি হয়ত তাদের চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে ফেলতে পারেন! তাদের টিপে চিপে মাটির সাথে মিশিয়ে ফেলতে পারেন। তাতে আপনার তখন আর কোন লাভ নেই, বরং আপনার যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে তাতে, তাদের কিছুই আসে যায় না। আর যদি তারা এই খাবারের সন্ধান পেয়ে থাকে তাহলে এর প্রতিরোধ না করলে আবার একই ঘটনা ঘটতে পারে এতে কোন সন্দেহ নাই। এই ছোট্ট বাহিনীর অপূরণীয় ক্ষতি থেকে বেচে থাকার উপায় কি…?
১) সাবান পানি একটা স্প্রে এর মধ্যে ভরে, ওদের বাসা বা কলোনি তে স্প্রে করুন। এতে ওরা কলোনি অন্য জায়গায় সরিয়ে নিবে।
২) শশার ছিলকা বা গোল করে কাটা শশা পিঁপড়া পূর্ণ জায়গায় রেখে দিন দেখবেন কিছুক্ষণের মধ্যেই এলাকা খালি হয়ে গেছে। এর গন্ধ পিঁপড়া একেবারেই সহ্য করতে পারে না। তিতা শশা হলে ভাল। আমার টয়লেটে এ রকম প্রচুর পিঁপড়ার অত্যেচার ছিল। কিন্তু এই ব্যাবস্থা নিবার পর এখন আর নাই। এই পদ্ধতি তে মাছিও বিতারিত হয়।
৩) গোল মরিচ, দারুচিনি, লেবুর রস একটা তুলাতে করে নিয়ে ও কমলার জুস একটা তুলাতে নিয়ে এক জায়গাতে করে যে জায়গায় ওদের কলোনি বা দেয়ালের ফাটা জায়গায় রেখে দিন। দেখবেন ওদের কলোনি নির্মূল হয়ে গেছে।
৪) লবঙ্গ ও রসুন ওদের কলোনি বা দেয়ালের ফাটা জায়গায় রেখে দিন। দেখবেন ওদের কলোনি সরিয়ে নিয়ে এলাকা ছেড়ে দিয়েছে।
৫) খামারে রাতে ডিম লাইট ব্যাবহার করেন রাতের বেলা, বর্ণালি অল্প আলো ওদের কাছে সহ্য হয় না। এতে অনেক উপকার পেতে পারেন।
৬) নেপথলিন/কর্পূর এর গন্ধ এরা সহ্য করতে পারে না। যদিও এগুলো নেপথলিন টক্সিক হিসাবে কাজ করে। তাই এর ব্যাবহারে সতর্ক থাকতে হবে। যদিও আমি আমার খামারে এটি ব্যবহার করে ভাল ফল পেয়েছি। যদিও কর্পূর ভাল ঔষধি হিসাবে কাজ করে। কলেরা রোগে কুসুম গরম পানি যোগে ১ চিমটি কর্পূর খাওয়ালে ভাল ফল পাওয়া যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা হিসাবে।